বিজয় কীবোর্ড কি ?
বিজয় কীবোর্ড কি ?
বিজয় একটি বাংলা শব্দ যার ইংরেজি অর্থ হল Victor. বিজয় কীবোর্ড হল কম্পিউটারে ব্যবহৃত প্রথম বাংলা কীবোর্ডের লেআউট যা দিয়ে বাংলাতে টাইপ করা যায়। মোস্তফা জব্বার এই কীবোর্ড লেআউট প্রথম বাজারে প্রকাশ করেন। Windows 98 এর সময়কাল থেকে এই কীবোর্ডের প্রচলন শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে বাংলা টাইপ করার বিভিন্ন ধরনের কীবোর্ড বাজারে চালু রয়েছে। বিজয় কীবোর্ডের বেশকিছু ভার্সন বর্তমানে ব্যবহার হয়ে থাকে যার মধ্যে বিজয় ২০০০, Bijoy Pro for WinXP, বিজয় ২০০৩ এবং বিজয় বাহান্ন অন্যতম।
বিজয় কীবোর্ড লেআউটঃ
এই কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য প্রথমে আপনাকে বিজয় কীবোর্ডের সফটওয়্যারটি কম্পিউটারে ইন্সটল দিতে হবে । এটি কোন ফ্রী এপ্লিকেশন নয় , তবে সহজেই এটি বাজারে কিনে নিতে পারবেন । বিজয় কীবোর্ডের লেআউটটি নিচে দেয়া হলঃ
Bijoy Keyboard Layout
বিঐজয় কীবোর্ড কিভাবে সেট করবেন ?
বিজয় কীবোর্ড ইন্সটল দেয়ার পর এটিকে ব্যবহারের জন্য সেট করা প্রয়োজন। আর তাই সেট করার জন্য কীবোর্ডে প্রেস করুন Ctrl+Alt+B, এখন আপনার কীবোর্ডটি বাংলা লেখার জন্য সেট হয়ে গেছে। এবার আপনাকে ফন্ট সেট করে নিতে হবে। এটি ডিফল্ট ভাবে অভ্রর মতো ফন্ট সেট করে নেয়না । সাধারনত sutonnyMJ ফন্টটি বিজয়ে লেখার জন্য বেশি ব্যবহার হয় । আপনার ফন্ট সেটআপটি বাংলায় কনভার্ট হয়েছে কিনা সেটি পর্যবেক্ষণ করতে Shift+F প্রেস করুন। যদি আপনার ফন্ট সেটআপটি ঠিক থাকে তাহরে বাংলা বর্ণমালার প্রথম বর্ণটি আসবে, অর্থাৎ অ আসবে । যদি বাংলা থেকে পুনরায় ইংলিশ ফন্টে আসতে চান, তাহলে আবার Ctrl+Alt+B প্রেস করুন এবং ফন্টকেও পরিবর্তন করে যেকোন একটি ইংরেজি ফন্ট ( Times New Roman ) সেট করুন । তাহলে আপনি পুনরায় ইংলিশ টাইপ করতে পারবেন।
বিজয় কীবোর্ড লেআউটে বাংলা লেখার কিছু নির্দেশনা
সাধারণত যে সকল কীবোর্ডে বিজয় লেআউট রয়েছে সে সকল কীবোর্ডে লক্ষ্য করলে দেখবেন প্রতিটি কী তে দুটি করে বাংলা অক্ষর রয়েছে। যার একটি উপরে এবং একটি নিচে। আপনি যখন বাংলা টাইপ করবেন তখন নিচের অক্ষর গুলো লিখতে চাইলে সাধারণ প্রেসেই সেগুলো লিখবে। কিন্তু যখন উপরের অক্ষর গুলো লিখবেন তখন অবশ্যই আপনাকে Shift বাটন চেপে ধরে নিচের অক্ষর গুলো লিখতে হবে। এছাড়াও যখন কোন যুক্ত অক্ষর লিখার প্রয়োজন হবে তখন একটি অক্ষরের সাথে অন্য অক্ষর লিঙ্ক করতে অর্থাৎ যুক্ত করতে ‘G’বাটন প্রেস করতে হবে। তাই ‘G’ বাটনটি হল লিঙ্ক বাটন যার মাধ্যমে যুক্ত অক্ষর গুলো লিখা যায়।
এছাড়াও আরও একটি বিষয় রয়েছে। বিজয় কীবোর্ডের লেআউট লক্ষ্য করলে দেখবেন সেখানে কোন স্বরবর্ণ নেই, কিন্তু এমন অনেক শব্দ রয়েছে যেগুলোতে স্বরবর্ণ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। যেমন আমরা লিখার জন্য ‘আ’ লিখা প্রয়োজন আবার অমর লিখার জন্য ‘অ’ লিখা প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হল কিভাবে এই স্বরবর্ণ অক্ষর গুলো লিখবেন। সে ক্ষেত্রে যুক্ত বর্ণের মতো এখানেও আপনাকে ‘G’ বাটনটি সাহায্য করবে। বিজয় কীবোর্ড লেআউট এ লক্ষ্য করলে দেখবেন ‘G’বাটনের ঠিক বামপাশের বাটন গুলো অর্থাৎ A,S,D,F,Z,X,C এই বাটন গুলোতে স্বরবর্ণের প্রতিক চিহ্ন গুলো রয়েছে যেমনঃ আকার, একার, উকার, ইকার ইত্যাদি। এখন যদি আপনি ‘অ’লিখতে চান তাহলে Shift চেপে ‘F’ চাপলেই ‘অ’লিখা চলে আসবে, আবার ‘আ’ লিখতে চাইলে ‘G’চেপে ‘F’ চাপলেই ‘আ’ লিখা চলা আসবে। এভাবে ই লিখার জন্য G+D তাহলে ‘ই’ লিখা চলে আসবে, আবার ‘ঈ’ লিখার জন্য Shift+G+D প্রেস করলে ঈ লিখা চলে আসবে। এখানে ‘ঈ’ লিখার জন্য G+D এর সাথে Shift ব্যবহার করা হয়েছে কারন ঈকার টি উপরে রয়েছে, যা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি।
বিজয় কিবোর্ড রেফ
অনেকের ই রিকুয়েস্টে আলোচনায় আনতে হলো বিজয় কিবোর্ড এ রেফ কিভাবে লেখে । বিসয়টি খুবই সহজ । রেফ নেবার জন্য আপনাকে Shift + A চাপতে হবে । এই টুকুই নিচে একটি ভিডিও দেয়া হল আরো সহজে বোঝানোর জন্য
স্বরবর্ণ: অ= Shift+F, আ= G +F, ই=G+D, ঈ=G+(Shift+S) , উ=G+S , ঊ=G+(Shift+S) , ঋ= G+A, এ= G+C ঐ=G+(Shift+C), ও=X, ঔ=G+(Shift+X), যুক্তাক্ষর: ত্র= k+Z, ক্ত= J+G+k, জ্ঞ= U+G+(shift+I) ঞ্চ=(shift+I)+G+Y, ক্ষ= J+G+(shift+N), ত্থ= K+G+(shift+K) ষ্ণ=(shift+N)+ G+(shift+B), ক্ষ্ম= J+G+(shift+N)+G+M , হ্ম= I+G+M ঞ্জ=(shift+I)+G+U, ঙ্গ= Q+G+O
বিজয় কীবোর্ড কিভাবে সেট করবেন ?
বিজয় কীবোর্ড ইন্সটল দেয়ার পর এটিকে ব্যবহারের জন্য সেট করা প্রয়োজন। বিজয় কীবোর্ড এর মাধ্যমে লেখার জন্য আপনাকে দুটি কাজ করতে হবে। প্রথমে বাংলা ফন্ট সেট করতে হবে এবং বাংলা লেখার সফটওয়্যার চালু করতে হবে ।এ দুটি কাজের মধ্যে কোন একটি কাজ না করলে বাংলা লেখা যাবে না।
বাংলা লেখার সফটওয়্যার চালু করার জন্য কীবোর্ডে প্রেস করুন Ctrl+Alt চাপ দিয়ে ধরে B চাপ দিতে হবে, এখন আপনার কীবোর্ডটি বাংলা লেখার জন্য সেট হয়ে গেছে। সাধারনত SutonnyMJ ফন্টটি বিজয়ে লেখার জন্য বেশি ব্যবহার হয় । যদি আপনার ফন্ট সেটআপটি ঠিক থাকে তাহরে বাংলা বর্ণমালার প্রথম বর্ণটি আসবে, অর্থাৎ অ আসবে ।
যদি বাংলা থেকে পুনরায় ইংরেজী ফন্টে আসতে চান, তাহলে আবার Ctrl+Alt+B প্রেস করুন এবং ফন্টকে পরিবর্তন করতে যেকোন একটি ইংরেজী ফন্ট যেমন (Times New Roman/Calibri) সেট করুন । তাহলে আপনি পুনরায় ইংরেজী টাইপ করতে পারবেন।
বিজয় কী-বোর্ডে প্রতিটি বোতামে দুটি করে বাংলা অক্ষর আছে। শিফট (Shift) বোতাম চেপে কোন বোতামে চাপ দিলে ঐ বোতামের উপরের বাংলা অক্ষর এবং শিফট (Shift) বোতাম না চেপে কোন্ বোতামে চাপ দিলে ঐ বোতামের নিচের বাংলা অক্ষর পাওয়া যায়।
বিজয় কী-বোর্ড -এ ‘অ’ এবং ‘ও’ ছাড়া অন্য কোন স্বরবর্ণ নেই। আপনি যদি সেসব স্বরবর্ণ ব্যবহার করতে চান তবে প্রথমে এ (কী-বোর্ডে সংযুক্তি বা হসন্ত মুদ্রিত থাকবে) টাইপ করবেন এবং এরপর সংশ্লিষ্ট স্বরচিহ্ন টাইপ করবেন।
বাংলায় যুক্তাক্ষর তৈরির জন্য ইংরেজী (G) বোতামকে সংযুক্তি বোতাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেমন- ‘শক্ত’ শব্দের ‘ক্ত’ বর্ণটি হচ্ছে ‘ক’ এবং ‘ত’ বর্ণের যুক্তরূপ। এজন্য ‘ক’ টাইপ করে ্ (হসন্ত) বা G বোতামে চাপ দিয়ে ‘ত’ টাইপ করলে ‘ক্ত’ যুক্তাক্ষর তৈরি হয়ে যায়।
বিজয় কী-বোর্ড পরিচিতি ও ব্যবহার
কিন্তু কিছু যুক্তাক্ষর সম্পর্কে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা দেখা দেয়। কোন কোন বর্ণের সমন্বয়ে ঐ যুক্তার তৈরি হয় তা জানা নাও থাকতে পারে। যেমনঃ ডিস্ক, ঋষি, বাক্স, সূক্ষ্ম, রাষ্ট্র, গ্রীষ্ম, মন্ত্র, স্বপ্ন, সম্ভ্রম, কম্প্লেইন, উল্কা, ভ্রু, ভ্রূ, ম্লান, লম্ফ, কম্বল, শুষ্ক, স্ক্রু, হৃদয়, অপরাহ্ণ, চিহ্ন, শুশ্রূষা, ভস্ম, অঞ্জন, বিজ্ঞান, বাঞ্ছনীয়, কৃষ্ণ, ব্রহ্মান্ড, আকাঙ্খা, মুগ্ধ, উৎকণ্ঠা, তেজস্ক্রিয়, চঞ্চল, শুদ্ধ, চট্টগ্রাম ইত্যাদি শব্দে ব্যবহৃত যুক্তাক্ষরগুলো।
বিজয় কীবোর্ড লেআউটে বাংলা লেখার কিছু নির্দেশনা
কীবোর্ডে লক্ষ্য করলে দেখবেন প্রতিটি কী তে দুটি করে বাংলা অক্ষর রয়েছে।আপনি যখন বাংলা টাইপ করবেন তখন নিচের অক্ষর গুলো লিখতে চাইলে সাধারণ প্রেসেই সেগুলো লিখবে। কিন্তু যখন উপরের অক্ষর গুলো লিখবেন তখন অবশ্যই আপনাকে Shift বাটন চেপে ধরে নিচের অক্ষর গুলো লিখতে হবে। এছাড়াও যখন কোন যুক্ত অক্ষর লিখার প্রয়োজন হবে তখন একটি অক্ষরের সাথে অন্য অক্ষর লিঙ্ক করতে অর্থাৎ যুক্ত করতে ‘G’ বাটন প্রেস করতে হবে। তাই ‘G’ বাটনটি হল লিঙ্ক বাটন যার মাধ্যমে যুক্ত অক্ষর গুলো লিখা যায়।#######৳৳৳৳######
নিন্মে কিছু গুরুত্বপূর্ন যুক্ত বর্ণের তালিকা সমূহ দেয়া হল:
ত্থ = ত + থ (উদাহরন: উত্থান, উত্থাপন)
ত্ত = ত + ত (উদাহরন: উত্তম, উত্তর, সত্তর)
ত্ম = ত + ম (উদাহরন: মাহাত্ম্য)
ক্ক = ক + ক; যেমন- আক্কেল, টেক্কা
ক্ট = ক + ট; যেমন- ডক্টর
ক্ট্র = ক + ট + র; যেমন- অক্ট্রয়
ক্ত = ক + ত; যেমন- রক্ত
ক্ত্র = ক + ত + র; যেমন- বক্ত্র
ক্ব = ক + ব; যেমন- পক্ব, ক্বণ
ক্ম = ক + ম; যেমন- রুক্মিণী
ক্য = ক + য; যেমন- বাক্য
ক্র = ক + র; যেমন- চক্র
ক্ল = ক + ল; যেমন- ক্লান্তি
ক্ষ = ক + ষ; যেমন- পরীক্ষা
ক্ষ্ণ = ক + ষ + ণ; যেমন- তীক্ষ্ণ
ক্ষ্ব = ক + ষ + ব; যেমন- ইক্ষ্বাকু
ক্ষ্ম = ক + ষ + ম; যেমন- লক্ষ্মী
ক্ষ্ম্য = ক + ষ + ম + য; যেমন- সৌক্ষ্ম্য
ক্ষ্য = ক + ষ + য; যেমন- লক্ষ্য
ক্স = ক + স; যেমন- বাক্স
খ্র = খ+ র যেমন; যেমন- খ্রিস্টান
গ্ণ = গ + ণ; যেমন – রুগ্ণ
গ্ধ = গ + ধ; যেমন- মুগ্ধ
গ্ধ্য = গ + ধ + য; যেমন- বৈদগ্ধ্য
গ্ধ্র = গ + ধ + র; যেমন- দোগ্ধ্রী
গ্ন = গ + ন; যেমন- ভগ্ন
গ্ন্য = গ + ন + য; যেমন- অগ্ন্যাস্ত্র, অগ্ন্যুৎপাত, অগ্ন্যাশয়
গ্ব = গ + ব; যেমন- দিগ্বিজয়ী
গ্ম = গ + ম; যেমন- যুগ্ম
গ্ল = গ + ল; যেমন- গ্লানি
ঘ্ন = ঘ + ন; যেমন- কৃতঘ্ন
ঙ্ক = ঙ + ক; যেমন- অঙ্ক
ঙ্ক্ত = ঙ + ক + ত; যেমন- পঙ্ক্তি
ঙ্ক্য = ঙ + ক + য; যেমন- অঙ্ক্য
ঙ্ক্ষ = ঙ + ক + ষ; যেমন- আকাঙ্ক্ষা
ঙ্খ = ঙ + খ; যেমন- শঙ্খ
ঙ্গ = ঙ + গ; যেমন- অঙ্গ
ঙ্গ্য = ঙ + গ + য; যেমন- ব্যঙ্গ্যার্থ, ব্যঙ্গ্যোক্তি
ঙ্ঘ = ঙ + ঘ; যেমন- সঙ্ঘ
ঙ্ঘ্য = ঙ + ঘ + য; যেমন- দুর্লঙ্ঘ্য
ঙ্ঘ্র = ঙ + ঘ + র; যেমন- অঙ্ঘ্রি
ঙ্ম = ঙ + ম; যেমন- বাঙ্ময়
চ্চ = চ + চ; যেমন- বাচ্চা
চ্ছ = চ + ছ; যেমন- ইচ্ছা
চ্ছ্ব = চ + ছ + ব; যেমন- জলোচ্ছ্বাস
চ্ছ্র = চ + ছ + র; যেমন- উচ্ছ্রায়
চ্ঞ = চ + ঞ; যেমন- যাচ্ঞা
জ্জ্ব = জ + জ + ব; যেমন- উজ্জ্বল
জ্ঝ = জ + ঝ; যেমন- কুজ্ঝটিকা
Comments
Post a Comment